এক শহর ছিলো শূন্যে ভাসমান! শহরের নদীগুলো শুকিয়ে পড়ছিলো খরায়! জড়গুলো মরে যাচ্ছিলো বৃষ্টিহীনতায়, জীবগুলো বেচেঁ ছিলো মৃত্যুর আশায়! আকাশ হয়ে ছিলো তারাশূন্য, চাঁদেরও ছিলোনা বহুদিন কোনো খোঁজ! শহরটি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছিল শূন্যতায়, হতাশার গম্ভীর কুয়াশায়!
অতপর, শহরটিতে অভাবনীয় একটি ঋতুর আগমন হলো ! শহরটি মুখরিত হয়ে গেলো জনবহুলের আড্ডায়, প্রেমিক-প্রেমিকাদের ভাবনায়, ঝলমল তারার তলে, চাঁদের প্রতিফলনে, পাখিদের কোলাহলে, গাছগুলোর ফুটন্ত ফুলে, বৃষ্টির টিপ টিপ জলে, ভরে যাওয়া নদীর প্রবাহে, সুভাশিত পরিবেশের মধ্যে, কবিদের কবিতার ছন্দে, গায়কদের গানের সুরে! শহরটি জীবিত হয়ে উঠলো স্বল্প সময়ে! কখন যে শহরটি, ঋতুটাকে আপন করে রাখার তীব্র প্রত্যাশায় হারিয়ে গেলো, তা শহরটিরও অজানা! শহরটির লাগছিলো যেন, এ ঋতুর সৃষ্টি তারই জন্য! শহরটি নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো, ঋতুটিকে আপন করার জন্য নিজেকে গড়তে লাগলো! ঋতুটি শহরটির জন্য হৃদয় জুড়ানো গান গাইছিলো, শহরটিতে থেকে যাওয়ার অজুহাত খুঁজছিলো! তাদের দুজনের জানা ছিলো ঋতুটি অন্য শহরের নামে লিখা, যে শহর নিজেকে গড়ে তুলেছিলো এই ঋতুর জন্য! কিন্তু ঋতু চেয়েছিলো গড়ে উঠা সেই শহরে নয়, গড়তে থাকা এই শহরে থাকার! এই শহরটি বিভিন্ন উপায় খুঁজছিলো ঋতুটিকে আপন করার, কিন্তু ঋতুটি বলে উঠলো “ইহা কভু সম্ভব নয়”! শহরটিতে ব্যার্থতার বাতাস বইতে শুরু করলো, ঋতুটি হারিয়ে যাচ্ছিলো সেই প্রবাহমান বাতাসে! ঋতুটির কণ্ঠে যখন তার সেই গঠিত শহরের প্রশংসা শুনতে পেলো, এই শহরটিতে যেনো কালবৈশখীর ঝড় শুরু হয়ে গেলো! পুরো শহরটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো ঝড়ের তলে! শহরটি তার প্রিয় ঋতুকে বিদায় দিলো, এবং নিজেকে সামলাতে শুরু করলো! শহরটি স্মৃতিগুলো নিয়ে বেঁচে থাকার প্রতিজ্ঞা নিলো! সেই শহরটির হৃদয়ে জন্মানো ঋতুটির অনুভূতি প্রকাশে ভাষাও ব্যার্থ! শহরটি যেন ঋতুটির প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ! শহরটি এখন সেই স্মৃতিগুলো দেখছে আর বেচেঁ থাকার শক্তি খুঁজে যাচ্ছে !